আওয়ামী শাসনামলে সংসদ সদস্যের সুবিধা নিয়ে শুল্কমুক্ত সুবিধায় আনা সাবেক সংসদ সদস্যদের (এমপি) ৪৪টি গাড়ি আজ নিলামে তুলেছে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস।
চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজে অনলাইনের মাধ্যমে টেন্ডার মুল্য জমা দেয়া গাড়িগুলোর এই নিলাম ডাক অনুষ্ঠিত হয়। সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ২টায় টেন্ডার বক্স খোলা হলে উপস্থিত টেন্ডারদাতাদের সামনে গাড়ি নিলামের বিষয়টি উম্মুক্ত করা হয়।
জানা গছে, নিলামে তোলা ৪৪টি গাড়ির মধ্যে ২৪টি সাবেক এমপিদের জন্য আনা বিলাসবহুল ল্যান্ডক্রুজার গাড়ি। নিলামে চট্টগ্রাম কাস্টমস কর্তৃপক্ষ প্রতিটি গাড়ির সংরক্ষিত বিক্রয় মূল্য নির্ধারণ করে ৯ কোটি ৬৭ লাখ ৩ হাজার ৮৯৯ টাকা।
নিলামের দায়িত্বে থাকা সহকারী কমিশনার মো. সাকিব হোসেন বলেন, ‘কাস্টমস নিলামের শর্ত অনুযায়ী প্রথম টেন্ডারে নির্ধারিত মুল্যের ৬০ শতাংশ পর্যন্ত বিডার (টেন্ডার মূল্য) পাওয়া গেলে ক্রয়াদেশ দেয়ার বিষয় বিবেচনা করা যায়। এক্ষেত্রে পাওয়া টেন্ডার মূল্য যাছাই-বাছাই করা হবে। আশানুরূপ না হলে দ্বিতীয়বার টেন্ডারে যাবে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। চট্টগ্রাম কাস্টমসের নিলাম কমিটি টেন্ডার যাচাইবাছাই করে বিক্রয় অনুমোদন দিবেন বলে জানিয়েছেন কাস্টমস কর্তারা।’
তিনি জানান, ‘তারা সোমবার দুপুর ২টায় টেন্ডার বক্স খোলে ৪৪টির মধ্যে ৩৫টি গাড়ির জন্য টেন্ডার পেয়েছেন ১৪৩টি। এসব গাড়ি সাবেক এমপিদের শুল্কমুক্ত সুবিধায় আনা। কিন্তু তারা জুলাই অভ্যুত্থানের আগে খালাস না করায় এখন আর শুল্কমুক্ত সুবিধা পাচ্ছেন না।’
এই কর্মকর্তা জানান, ‘কাস্টমস-এর রুলস অনুযায়ী আমদানিকৃত পণ্য জাহাজ থেকে বন্দর ইয়ার্ডে নামার ৩০ দিনের মধ্যে আমদানিকারককে সরবরাহ নিতে হয়।’
তিনি আরও জানান, সাবেক এমপিদের শুল্ক সুবিধায় আনা ২৪টি গাড়ির প্রতিটির সংরক্ষিত মূল্য নির্ধারণ ছিল ৯ কোটি ৬৭ লাখ ৩ হাজার ৮৯৯ টাকা। আজ দরপত্র খোলার পর দেখা যায় এসব গাড়ির টেন্ডার জমা হয়েছে সর্বোচ্চ ৩ কোটি ১০ লাখ টাকা। অন্যান্য গাড়িগুলোর টেন্ডার মূল্য জমা হয়েছে ১ কোটি ৫০ লাখ থেকে ১ কোটি ৬০ লাখ টাকা পর্যন্ত।
এই সময়ের মধ্যে কোনো আমদানিকারক পণ্য সরবরাহ না নিলে তাকে নোটিশ দেয় কাস্টমস। নোটিশ দেওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে এই পণ্য সরবরাহ না নিলে তা নিলামে তুলতে পারে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। এছাড়া মিথ্যা ঘোষণায় জব্দ পণ্যও নিলামে তোলা যায়।
সর্বমোট ৪৫ দিনের মধ্যে নিলামে তোলার এই নিয়ম দীর্ঘদিন ধরে কার্যকর করতে পারেনি বন্দর ও কাস্টমস। এতে করে বন্দরের ইয়ার্ডে এসব গাড়ি বা কন্টেইনার দীর্ঘদিন পড়ে থাকায় চট্টগ্রাম বন্দর ইয়ার্ডে স্থান সংকুলানের অভাবে কন্টেইনার বা পণ্য রাখা সম্ভব হচ্ছিলোনা। ফলে দিনের পর দিন কন্টেইনার বা গাড়ি পড়ে থাকলেও বন্দর কর্তৃপক্ষও চার্জ পায় না।