প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কথা সবাইকে বিশ্বাস করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন আইন, বিচার ও সংসদ এবং প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল।
তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনের যে টাইমলাইন দিয়েছেন, এর কোনো ব্যত্যয় হবে না। সম্প্রতি রাজধানীর হেয়ার রোডে তার সরকারি বাসভবনে গণমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন।
‘আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা অন্তর্বর্তী সরকারের বিচারের কথা বলেছেন। এতে আপনি ভীতু বা চাপবোধ করছেন কি না?’ এমন প্রশ্নের জবাবে আসিফ নজরুল বলেন, প্রশ্নই আসে না। কোনো চাপবোধ করছি না। উনি যেসব কথা বলেন, তা হাস্যকর মনে হয়। উনি বারবার বলেন, আমি কিন্তু বাংলাদেশে চলে আসবো ইত্যাদি ইত্যাদি।
এই উপদেষ্টা আরও বলেন, আমরা বলছি, আপনি বাংলাদেশে আসুন। এটাই আমরা চাচ্ছি। আপনাকে প্রত্যর্পণের আবেদন করে রেখেছি। আপনি বাংলাদেশে এসে আদালতের বিচারের সামনে দাঁড়ান। আমরা তো সেটাই চাই। মাঝেমধ্যে ওনাকে (শেখ হাসিনা) মানসিক ভারসাম্যহীন মনে হয়। এত মানুষকে হত্যা করার পর এভাবে মিথ্যাচার করে কবিতা আবৃত্তি করেন, ওনার ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়ি ভাঙচুর হয়ে গেছে, ওনার নেতাকর্মীরা হুমকির মুখে অথচ উনি অন্য একটি দেশের আতিথেয়তা গ্রহণ করে কবিতা আবৃত্তি করা কোনো সুস্থ মানুষের পক্ষে সম্ভব না।
‘গণঅভ্যুত্থানের পর বিপ্লবী সরকার গঠন না হয়ে কেন অন্তর্বর্তী সরকার হলো?’ এমন প্রশ্নের জবাবে আসিফ নজরুল বলেন, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পতন অনেকটা আকস্মিক ছিল। নতুন সরকার গঠন নিয়ে খুব একটা প্রস্তুতি ছিল না। শেখ হাসিনার পতনের পর কী ধরনের সরকার গঠন হবে, সেটা নিয়ে সিরিয়াস আলোচনা-কথাবার্তা হয়নি।
আসিফ নজরুল আরও বলেন,তখন আমরা শেখ হাসিনাকে কিভাবে সরাবো, তা নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিলাম। ফলে দ্রুত এতকিছু পরিকল্পনা করে সরকার গঠন করা সম্ভব হয়নি। আমি মনে করি, ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থান ছিল। সেখানে বিপ্লবের উপাদান ছিল; কিন্তু বিপ্লব ছিল না। বিপ্লব সেটা, যেখানে বিপ্লবের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ থাকে, প্রস্তুতি থাকে, বিপ্লবের পক্ষে বাহিনী থাকে। কিন্তু সেখানে এগুলো কিছু ছিল না। তবে শেখ হাসিনা যদি আরও বেশিদিন ক্ষমতায় থাকতেন, আরও গণহত্যা চালাতেন, তাহলে এটা বিপ্লবে রূপ নিতে পারতো।