মাগুরায় ধর্ষণের শিকার আটবছর বয়সী সেই শিশুটির অবস্থা বেশ সংকটাপন্ন। এখনও প্রতিক্রিয়াহীন তার মস্তিষ্ক। এ ছাড়া হঠাৎ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে হৃৎস্পন্দনও।
বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, আরও দুবার ‘কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট’ (আকস্মিকভাবে হৃৎস্পন্দন বন্ধ হয়ে যাওয়া) হয়েছে তার। এ নিয়ে দুইদিনে মোট ছয়বার কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের শিকার হয়েছে শিশুটি।
সবশেষ হৃৎস্পন্দন বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর রিভার্স করতে প্রায় ৩০ মিনিট সিপিআর দিতে হয়েছে তাকে। শিশুটির ব্রেন এখনও ফাংশন করছে না। রক্ত চাপ ও অক্সিজেন লেভেল অনেক কম।
এর আগে, গতকাল রাতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এক ফেসবুক পোস্টে জানায়, বুধবার চিকিৎসাধীন অবস্থায় চারবার ‘কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট’ (আকস্মিকভাবে হৃৎস্পন্দন বন্ধ হয়ে যাওয়া) হয়েছে শিশুটির। সিপিআর (কার্ডিও পালমোনারি রিসাসিটেশন) দিয়ে তার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল করা হয়েছে। রক্তে লবণের ভারসাম্যহীনতার কারণে ডায়ালাইসিস করা হচ্ছে। অন্যান্য জটিলতার পাশাপাশি শিশুটির রক্তচাপ ৬০/৪০ মিমি পারদ কিংবা তার চেয়ে নিম্নমুখী।
ওই পোস্টে সেনাবাহিনী আরও জানায়, ঢাকায় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের (সিএমএইচ) শিশু বিভাগের শিশুরোগের চিকিৎসাসংক্রান্ত নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে (পিআইসিইউ) শিশুটির চিকিৎসা চলছে। প্রতিদিন স্ট্যান্ডার্ড আইসিইউ প্রটোকল অনুযায়ী প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা এবং সে অনুযায়ী তাকে সর্বোচ্চ চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে।
আট বছরের শিশুটি গত বুধবার (৫ মার্চ) বোনের বাড়ি বেড়াতে গিয়ে গভীর রাতে ধর্ষণের শিকার হয়। শিশুটিকে প্রথমে মাগুরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে সেখান থেকে স্থানান্তর করা হয় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানেও তার অবস্থার কোনো উন্নতি হয়নি। পরে বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) রাতে অচেতন অবস্থায় শিশুটিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শুক্রবার (৭ মার্চ) রাতে শিশুটিকে লাইফ সাপোর্ট দেওয়া হয়। অবস্থার আরও অবনতি হলে শনিবার (৮ মার্চ) বিকেলে শিশুটিকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) স্থানান্তর করা হয়। সেখানেই এখন তার চিকিৎসা চলছে।
এদিকে চাঞ্চল্যকর এ ধর্ষণের ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার চার আসামির মধ্যে তিনজন পুরুষের ডিএনএ পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ইতোমধ্যে। মঙ্গলবার (১১ মার্চ) সকালে তিন আসামিকে মাগুরা থেকে ঢাকায় সিআইডির ডিএনএ প্রোফাইলিং ল্যাবে আনা হয়। একইসঙ্গে শিশুটির ডিএনএ নমুনাও জমা দেওয়া হয়।