চলতি সপ্তাহে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আবারও ২০ বিলিয়নের ঘরে ফিরে এসেছে। এই তথ্য বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।
জানুয়ারির শুরুতে রিজার্ভ ২১ বিলিয়ন ডলারের ঘরে পৌঁছালেও, মাসের মাঝামাঝি সময়ে আকুর বিল পরিশোধের পর তা আবার ১৯ বিলিয়নের নিচে চলে যায়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্যে, বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) পর্যন্ত আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল বা আইএমএফের হিসাব পদ্ধতি বিপিএম-৬ অনুযায়ী রিজার্ভ ২০ দশমিক ২০ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। একই দিনে, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পৃথক হিসাব অনুযায়ী, মোট রিজার্ভ ২৫ দশমিক ৫৪ বিলিয়ন ডলার বা ২ হাজার ৫৫৪ কোটি ডলারে দাঁড়িয়েছে।
গত ২৯ জানুয়ারি বিপিএম-৬ অনুযায়ী দেশে রিজার্ভ ছিল ১৯ দশমিক ৯৭ বিলিয়ন ডলার। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হিসাব মতে— ওইদিন মোট রিজার্ভ ছিল ২৫ দশমিক ৩১ বিলিয়ন ডলার। এর ফলে, গত ৬ দিনে বিপিএম-৬ হিসাব অনুযায়ী রিজার্ভ বেড়েছে ২৩ কোটি ডলার। তবে, বাংলাদেশ ব্যাংকের নিট রিজার্ভের একটি আলাদা হিসাবও রয়েছে, যা আইএমএফকে দেওয়া হয় এবং এটি বর্তমানে ১৫ বিলিয়ন ডলারের ঘরে অবস্থান করছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক রিজার্ভের তিনটি হিসাব সংরক্ষণ করে। প্রথমটি হলো বৈদেশিক মুদ্রায় গঠিত বিভিন্ন তহবিলসহ মোট রিজার্ভ। এর মধ্যে রয়েছে তৈরি পোশাক শিল্পের উদ্যোক্তাদের জন্য সহজ শর্তে ঋণসহ আরও কয়েকটি তহবিল। দ্বিতীয়টি হলো আইএমএফের হিসাব পদ্ধতি, যেখানে বৈদেশিক মুদ্রায় গঠিত ঋণ ও তহবিল বাদ দিয়ে একটি তহবিল হিসাব করা হয়। এই হিসাবটি হলো ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভ।
এছাড়া, রাজনৈতিক পরিস্থিতির পরিবর্তনের পর প্রবাসী আয়ের পরিমাণও বেড়েছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম থেকেই প্রতিমাসে দুই বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স এসেছে, যা এক নতুন রেকর্ড। ২০২৪ সালে প্রবাসীরা মোট ২৬ দশমিক ৮৯ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন, যা কোনো একক বছরে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভ ১৪ বিলিয়ন ডলারের নিচে নামে। সে সময় বৈদেশিক ঋণ ও বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংকের কাছ থেকে ডলার কেনার মাধ্যমে রিজার্ভ বাড়ানো হয়। আগস্টে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর নতুন গভর্নর এসে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি বন্ধ রেখেছে। আবার বিভিন্ন সোর্স থেকে ডলার যোগানের চেষ্টা করছে।