ফ্যাসিবাদী দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বিচারের জন্য অন্তর্বর্তী সরকার দৃশ্যমান কোনো উদ্যোগ নেয়নি দাবি করে বিএনপির বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, বর্তমান সরকারকে সঠিক পথে নিয়ে আসার জন্য রাস্তায় আন্দোলন করতে হতে পারে। সরকারকে সঠিক পথে নিয়ে আসতে কিছু উদ্যোগ নেবে বিএনপি।
তিনি বলেন, নির্বাচন কেন বিলম্বিত হবে, তা জনগণের সামনে তুলে ধরতে হবে। আওয়ামী লীগ নির্বাচন করতে পারবে কি না, জনগণই নির্ধারণ করবে।
বুধবার (২৯ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এমন মন্তব্য করেন তিনি।
সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, সরকার মাত্রই সিদ্ধান্তের মধ্যে ভুল করতে পারে। সেটা সব সরকারের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। এখন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সব সিদ্ধান্ত নির্ভুলভাবে নেবে এটা তো সঠিক নয়। ভুল তাদেরও হতে পারে। তবে সেটা সঠিকভাবে পরিচালনা করার দায়িত্ব এ দেশের সাংবাদিক সমাজের যেমন আছে, রাজনৈতিক দল, গণতান্ত্রিক শক্তি ও সামাজিক শক্তিগুলোরও আছে।
তিনি বলেন, আমরা আমাদের দলের পক্ষ থেকে চিন্তা করছি যে, সরকারের ভুল শুধরিয়ে সঠিক রাস্তায় এনে গণতান্ত্রিক রাস্তা বিনির্মাণের জন্য এবং একটি নির্বাচিত রাজনৈতিক সরকারের পথ পরিষ্কার করার জন্য আমরা খুব দ্রুত পদক্ষেপ নেব। সেটাকে সরকার আন্দোলনও বলতে পারেন, সমালোচনাও করতে পারেন।
প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য তুলে ধরে তিনি আরও বলেন, প্রধান উপদেষ্টা মাঝে মধ্যে বলেন, যে আমরা বেশি বেশি করে যেন সমালোচনা করি যাতে সরকার সঠিক পথে থাকে। এই সরকারের একটি ভালো গুণ আছে তা হচ্ছে, সরকার মাঝেমধ্যে ভুল সিদ্ধান্ত নিলেও সমালোচনার মুখে সেই ভুলগুলো শুধরায়, গো ধরে বসে থাকে না। সরকার যখন ভুল শুধরায় তখনই মনে করতে হবে এই সরকার জনগণের সরকার।
বিএনপি নেতা বলেন, আজকের দিনে প্রশ্ন হচ্ছে যে, আমরা সামনের দিকে কী কী সংস্কার চাই, কীভাবে নির্বাচন চাই, কখন নির্বাচন চাই ইত্যাদি প্রশ্ন হচ্ছে এই সরকারের সফলতা, ব্যর্থতা, সিদ্ধান্ত ও সিদ্ধান্তহীনতা। আমরা যদি এই অন্তর্বর্তী সরকারকে সফল হতে দিতে চাই, তাহলে সরকারকে গাইড করার জন্য, পরিচালনা করার জন্য আমাদেরকে যথেষ্ট সমালোচনা করতে হবে। এমনকি আমাদেরকে সড়কে আন্দোলনও করতে হতে পারে সরকারকে সঠিক রাস্তায় নিয়ে আসার জন্য।
তিনি বলেন, নির্বাচন যদি বিলম্বিত করবেন, সেই যৌক্তিকতা আপনাদেরকে জনগণের কাছে তুলে ধরতে হবে। ইতোমধ্যে ছয় মাস পার হয়েছে। সংস্কার কমিশনগুলো রিপোর্ট দিয়েছে সরকারের কাছে। সেই রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করে রাজনৈতিক দলগুলো, সামাজিক শুক্তিগুলো ও বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলার কথা। কিন্তু রিপোর্ট প্রদানের পরে প্রায় ১৪ থেকে ১৫ দিন পার হয়ে গেছে, সেই উদ্যোগ অবশ্য এখনও দেখা যায়নি। আমি আশা করি যে সমস্ত বিষয়গুলো রাজনৈতিক দল, সামাজিক শক্তিগুলো, বিশেষজ্ঞরা ঐকমত্য পোষণ করতে পারে, সেগুলো আগে চিহ্নিত করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, সংস্কার কমিশনের রিপোর্টগুলো অত্যন্ত সুন্দর, বুঝলাম। কিন্তু সকল বিষয়গুলো কি এসেছে? অবশ্যই না। আবার কিছু বিষয় কি অতিরিক্ত এসেছে? অবশ্যই হ্যাঁ। আর কিছু বিষয় এসেছে যেগুলো বাস্তবায়ন করা যাবে না। যে বিষয়গুলো বাংলাদেশের রাজনৈতিক কালচারে, সামাজিক কালচারে যায় না, সেইগুলো আমাদেরকে চিন্তা করতে হবে।