রোজার আগেই অস্থির তেল-চালের বাজার

Date:

বাজারে শাক-সবজি ও মাছের দাম কমলেও ব্রয়লার মুরগির দাম সামান্য বেড়েছে। এছাড়া রমজান মাস সামনে রেখে আবারও অস্থিরতা বিরাজ করছে তেল ও চালের বাজারে।

শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার কয়েকটি বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

রাজধানীর রামপুরা, মেরাদিয়া, সারুলিয়া, শনির আখড়া ও যাত্রাবাড়ি এলাকায় বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সাত দিনের ব্যবধানেেআরও বেড়েছে চালের দাম। প্রতি কেজি মিনিকেট ৮০-৯০, আটাইশ ৫৮-৬৫, মোটা স্বর্ণা ৫২-৬০, নাজিরশাইল ৭৬-৯০ ও পোলাওয়ের চাল ১১৬-১৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে, তেলের বাজার যেন আরও অস্থির। বাজারে বোতলজাত সয়াবিন তেলের কৃত্রিম সংকট কাটেনি। সামান্যই পাওয়া গেলেও তা নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া ১৭৫ থেকে ১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি খোলা সয়াবিন তেল।

এ বিষয়ে একাধিক ক্রেতার সঙ্গে কথা বললে তারা জানান, রোজায় সাধারণত ভোজ্য তেলের দাম কিছুটা বাড়লেও চালের দাম বাড়ে না। তবে গত বছর সিন্ডিকেট করে চালের দাম বাড়িয়ে দিয়েছিল ব্যবসায়ীরা। এবারও হয়ত সেই পথেই হাঁটছেন তারা। সেক্ষেত্রে রমজানে মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষের যে খুব কষ্ট হবে তা এখনই অনুমেয়।

কোম্পানিগুলো পর্যাপ্ত তেল সরবরাহ করছে না জানিয়ে একাধিক তেল বিক্রেতা বলেন, রমজান সামনে রেখে তারা দাম বাড়ানোর চেষ্টা করছে। আবার তেল কিনতে গেলে শর্ত জুড়ে দিয়ে সাথে তাদের অন্য পণ্য কিনতে বাধ্য করা হচ্ছে।

এছাড়া কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে গেছে ব্রয়লার মুরগির দাম। বিক্রি হচ্ছে ১৯০ থেকে ২২০ টাকা। আর প্রতি কেজি সোনালি মুরগি ৩০০-৩২০ টাকা, দেশি মুরগি ৫৫০-৬০০ টাকা, সাদা লেয়ার ২৪০ টাকা ও লাল লেয়ার বিক্রি হচ্ছে ২৮০ টাকায়। আর জাতভেদে প্রতি পিস হাঁস বিক্রি হচ্ছে ৬০০-৬৫০ টাকায়।

তবে স্থিতিশীল রয়েছে ডিমের দাম। প্রতি ডজন লাল ডিম ১৩০-১৩৫ টাকা ও সাদা ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকায়। আর প্রতি ডজন হাঁসের ডিম ২৩৫-২৪০ টাকা ও দেশি মুরগির ডিম ২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

অপরিবর্তিত রয়েছে গরু ও খাসির মাংসের দামও। বাজারে বর্তমানে প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০-৮০০ টাকায়। এছাড়া প্রতি কেজি খাসির মাংস ১ হাজার ৫০ টাকা থেকে ১ হাজার ১০০ টাকা ও ছাগলের মাংস বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার টাকায়।

স্বস্তি ফিরেছে সবজির বাজারে। কেজিতে ৫ টাকা পর্যন্ত কম মানভেদে প্রতি কেজি বেগুন ৪০-৫০ টাকা, করলা ৪০ টাকা, বরবটি ৫০ টাকা, মুলা ১৫-২০ টাকা, লতি ৫০ টাকা ও পটোল ৩০-৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর প্রতি কেজি পেঁপে ৩০-৩৫ টাকা, গাজর ২৫-৩০ টাকা, টমেটো ৩০-৩৫ টাকা, শিম ২০ টাকা, শালগম ২০ টাকা, মটরশুঁটি ৮০ টাকা ও শসা বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকায়।

এছাড়া প্রতি কেজি ধনেপাতা ২০-৩০ টাকা, পেঁয়াজের কলি ২০-২৫ টাকা, পাতাসহ পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকায়। আর মানভেদে প্রতি পিস ফুলকপি ২০-২৫ টাকা, বাঁধাকপি ২৫-৩০ টাকা, ব্রকলি ৩০-৪০ টাকা এবং লাউয়ের জন্য গুনতে হচ্ছে ৪০-৫০ টাকা।

সবজির দামের নিম্নমুখী প্রবণতা লক্ষ্য করা গেছে আলু ও পেঁয়াজের বাজারেও। বর্তমানে প্রতিকেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ২০-২৫ টাকায়। আর কেজিতে ৫ টাকা কমে খুচরায় প্রতি কেজি মুড়িকাটা পেঁয়াজ ৪৫-৫০ টাকা ও আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬০-৬৫ টাকায়।

স্থিতিশীল রয়েছে কাঁচা মরিচের দাম। খুচরা পর্যায়ে বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৪০-৫০ টাকায়, আর পাইকারিতে ৩০-৪০ টাকা। এছাড়া বাজারে লালশাকের আঁটি ১০ টাকা, পুঁইশাক ২০-২৫ টাকা, লাউশাক ৩০ টাকা, মুলাশাক ১০ টাকা, কলমিশাক ১০ টাকা, মেথি শাক ১০ টাকা ও পালংশাক বিক্রি হচ্ছে ১০ টাকায়।

অস্থির হয়ে ওঠা ইলিশের বাজারে স্থিতিশীলতা বিরাজ করলেও কমেছে অন্যান্য মাছের দাম। বর্তমানে এক কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২২০০ টাকায়। এছাড়া দেড় কেজি ওজনের ইলিশ ২৮০০ টাকা, ৮০০-৯০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ১৮০০-১৯০০ টাকা হারে বিক্রি হচ্ছে, আর ৫০০-৬০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ১৩০০-১৪০০ টাকা ও ৩০০-৪০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের জন্য গুনতে হচ্ছে ৭০০-৮০০ টাকা পর্যন্ত।

চাল আমদানি ও বাজারজাত করার সময় বাড়াল সরকারচাল আমদানি ও বাজারজাত করার সময় বাড়াল সরকার
বাজারে কেজিতে ২০-৫০ টাকা পর্যন্ত কমে প্রতি কেজি রুই ৩৮০ থেকে ৪২০ টাকা, কাতল ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা, চাষের শিং ৫৫০ টাকা, চাষের মাগুর ৫০০ টাকা, চাষের কৈ ২৪০ থেকে ২৮০ টাকা, কোরাল ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, টেংরা ৫৫০ থেকে ৭০০ টাকা, চাষের পাঙাশ ১৮০ থেকে ২০০ টাকা ও তেলাপিয়া ১৬০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।

এছাড়া প্রতি কেজি বোয়াল ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, পোয়া ৪৫০ টাকা, পাবদা ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা, আইড় ৭৫০ থেকে ৮০ টাকা, দেশি কৈ ১ হাজার ৩০০ টাকা থেকে ১ হাজার ৭০০ টাকা, শিং ১ হাজার ৪০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা, শোল ৯০০ থেকে ১ হাজার টাকা এবং নদীর পাঙাশ বিক্রি হচ্ছে ৮০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকায়।

নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত বাজার মনিটরিংয়ের দাবি ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়েরই। ক্রেতারা বলছেন, নিয়মিত বাজার মনিটরিং করা হয় না। এতে বিক্রেতারা ইচ্ছেমতো দাম বাড়ানোর সুযোগ পান।

আর বিক্রেতারা বলছেন, কিছু অসাধু ব্যবসায়ী ইচ্ছেমতো দাম বাড়াচ্ছেন। বাজারে নিয়মিত অভিযান চললে তবেই এই সমস্যার সমাধান সম্ভব।

Subscribe

সর্বাধিক পঠিত

আরও
Related

‘যায়যায়দিন’ পত্রিকার ডিক্লেয়ারেশন বাতিল

প্রকাশের ক্ষেত্রে নিয়ম লঙ্ঘনের অভিযোগে দৈনিক ‘যায়যায়দিন’ পত্রিকার ডিক্লেয়ারেশন...

মাগুরার শিশুটির অবস্থার আরও অবনতি, দুবার ‘কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট’

মাগুরার আট বছরের ধর্ষণের শিকার শিশুটির শারীরিক অবস্থার আরও...

শেখ হাসিনা-ইমরান এইচ’র বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরে হেফাজতের সমাবেশে গণহত্যার...

১৯ দেশের মিশন প্রধানদের ডেকেছে ইসি

১৯ দেশের মিশন প্রধানকে ডেকেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সব...