ভারতের বিলোনিয়া সীমান্ত শহরের বিপরীতে দক্ষিণ ত্রিপুরা বরাবর মুহুরি নদীর তীরে আরেকটি বড় বাঁধ নির্মাণ করছে বাংলাদেশ সরকার। বাঁধটির কারণে মৌসুমি বন্যার শঙ্কায় ভুগছেন ওপার সীমান্তের বাসিন্দারা। ফলে, পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে ওই এলাকায় একটি প্রতিনিধিদল পাঠিয়েছে ত্রিপুরা প্রশাসন।
সোমবার (২১ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে এনডিটিভি।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই বাঁধ নির্মাণের মাধ্যমে ভারতীয় সীমান্তের বাসিন্দাদের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। তাদের আশঙ্কা, বর্ষার বন্যার সময় গ্রামগুলোতে বন্যা সৃষ্টির কারণ হতে পারে বাঁধটি। এ জন্য নির্মাণস্থল পর্যবেক্ষণের জন্য রোববার (২০ এপ্রিল) উচ্চ পর্যায়ের একটি প্রতিনিধিদল পাঠিয়েছে ত্রিপুরার রাজ্য সরকার, যার নেতৃত্ব দিচ্ছেন ত্রিপুরা পাবলিক ওয়ার্কস বিভাগের সচিব কিরণ গিত্তে।
প্রতিবেদনে বলা বলেছে, পরিদর্শনের সময় দুদেশকে বিভক্তকারী মুহুরি নদীর তীরে বাংলাদেশ সরকারের নির্মিত বাঁধটির কারণে ভারতে কেমন প্রভাব পড়তে পারে, সেই বিষয়টি যাচাই করে দেখেছে প্রতিনিধিদল।
ইতোমধ্যে গ্রামবাসীর সঙ্গে দেখা করার পরে বিলোনিয়া পৌরসভার চেয়ারম্যানসহ নির্বাচিত প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেছে প্রতিনিধি দলটি।
কিরণ গিত্তে বলেছেন, দক্ষিণ ত্রিপুরার সদর বিলোনিয়া এবং আশপাশের গ্রামগুলোকে সুরক্ষা দিতে ভারত সরকারও বাঁধ নির্মাণ এবং অন্যান্য প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। চলতি বছরের জুন মাসের মধ্যেই মেরামত ও নির্মাণের সব কাজ শেষ হবে। কাজ চলবে ২৪ ঘণ্টা ধরে।
দক্ষিণ ত্রিপুরা জেলায় কাজের পরিমাণ অনেক বেশি হওয়ায় অতিরিক্ত পাঁচজন প্রকৌশলী সেখানে নিয়োগ দেয়ার কথাও জানান তিনি।
ত্রিপুরা রাজ্য সরকারের কর্মকর্তা আরও বলেন, ২০২৪ সালের আগস্টে ভয়াবহ বন্যা ও ভূমিধসে মুহুরি নদীর পাড়ঘেঁষে নির্মিত বহু বাঁধ ও অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সরকার ইতোমধ্যেই রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় ৪৩টি ক্ষতিগ্রস্ত স্থান চিহ্নিত করেছে, যার মধ্যে দক্ষিণ ত্রিপুরাও রয়েছে।
প্রতিনিধিদলের সীমান্ত এলাকা পরিদর্শনের সময় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)-এর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।
এনডিটিভির দাবি, এর আগেও উত্তর ত্রিপুরার উনাকোটি জেলার সীমান্তবর্তী এলাকায় একইভাবে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছিল। সেই বাঁধের কারণে বর্ষার সময় কৈলাশহর শহর ও আশপাশের গ্রামগুলোতে প্লাবনের আশঙ্কা বাড়ছে।